গলব্লাডারের বাংলা পিত্তাশয় বা পিত্তথলি। এটি নাশপাতির আকৃতির ফাঁপা অঙ্গ, যা যকৃতের ডানখ-ের নিম্নাংশে অবস্থান করে। এটি দৈর্ঘ্য প্রায় ৭-১০ সেন্টিমিটার ও প্রস্থ ৩ সেন্টিমিটার। খাদ্য পরিপাকে ব্যবহারের জন্য একবারে প্রায় ৩০-৫০ মিলিমিটার পিত্তরস ধারণ করে রাখে। পিত্তথলিতে পাথর জমা হওয়ার নাম পিত্তপাথরী। এতে নাভিপ্রদেশে ভীষণ ব্যথা-বেদনার সৃষ্টি করে। রোগটি হওয়ার কারণ হলো- শারীরিক নিয়মানুসারে পিত্তকোষ থেকে সঞ্চিত পিত্তরস পিত্তনালি দিয়ে ক্রমে ক্ষুদ্রান্তের প্রথমাংশ বা ডিউডেনামের মধ্যে প্রবাহিত হয়।
খাবারের দোষে বা পিত্তকোষ অথবা পিত্তনালির প্রদাহজনিত কারণে এ পিত্তপ্রবাহ বিঘিœত হতে পারে। এ কারণে পিত্তরস জমাট বেঁধে ক্রমে পিত্তপাথরী দেখা দেয়। যদি পিত্তপাথরী খুব ছোট হয় বা বালুকণার মতো থাকে, তা অনেক সময় নিজ থেকেই বেরিয়ে যায়। কখন বেরিয়ে যায়, তা বোঝা যায় না। তবে পিত্তপাথরী আকারে বড় হলে বেরিয়ে যেতে পারে না। তখন প্রচ- ব্যথা দেখা দেয়। এ ব্যথা ডানপাশ থেকে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে ডান স্কন্ধ ও পিঠে ছড়িয়ে পড়ে। প্রচ- ব্যথায় রোগী ছটফট করে এবং অস্থির হয়ে পড়ে। অনেক সময় ব্যথার সঙ্গে বমি হয়। শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
অনেক ক্ষেত্রে রোগীর শরীর হলুদ বর্ণ হয়ে যায়। পিত্তকোষ থেকে যদি পাথর না বের হয়ে যায়, তবে শেষ পর্যন্ত অপারেশন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ রোগ নিরাময়ে হোমিওপ্যাথি দারুণ কার্যকর। অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসক রোগীর ধাতুগত লক্ষণ মিলিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। আর তাতে পিত্তপাথরী ছোট হোক বা বড় হোক, বের হয়ে আসে। প্রাথমিকভাবে লক্ষণের ওপর ভিত্তি করে কোলেস্টেরিনাম, ডিজিটেলিস, চায়না, আর্নিকা, কার্ডুয়াস মেরিয়েনাস, ক্যালকেরিয়া কার্ব, চেলিডোনিয়ান ইত্যাদি ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।
Leave a Reply